আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলায় জবানবন্দি দিয়েছেন সাবেক আইজিপি সুনামগঞ্জের চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়ে তিনি এ জবানবন্দি দেন। এটি ছিল জুলাই-আগস্টের গণহত্যা মামলায় প্রথমবারের মতো কোনো সরকারি কর্মকর্তার জবানবন্দি।
গত ৩০ অক্টোবর গণমাধ্যমে খবর আসে- সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন গণহত্যার মামলায় রাজসাক্ষী হতে পারেন। ওই সময় কারাসূত্রের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে এ তথ্য প্রকাশ হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গণহত্যার ঘটনায় পুলিশকে গুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল এবং এর সঙ্গে তার কোনো যোগসূত্র থাকতে পারে। তবে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ট্রাইব্যুনালের পরবর্তী নির্দেশনার উপর নির্ভর করবে। এমনকি তিনি রাজসাক্ষী না হলেও ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে পারেন বলে আশা করা হচ্ছিল।
সাবকে আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ও শহীদুল হককে গত ৩ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) গ্রেফতার করে। এর আগে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন সেনা হেফাজতে ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় তিনি সেনা হেফাজতে থাকা অবস্থায় আত্মসমর্পণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। পরে তাঁকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। তিনি একাধিক থানার ১৭টি মামলায় অভিযুক্ত। মামুনকে কয়েক দফায় ৬৬ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এই সরকারে আইজিপির দায়িত্বে ছিলেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন। সরকার পতনের পরদিন তাঁর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ১৯৬৪ সালের ১২ জানুয়ারি সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার শ্রীহাইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের ১৯৮৬ তথা অষ্টম ব্যাচের কর্মকর্তা হিসেবে ১৯৮৯ সালের ২০ ডিসেম্বর সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট (এএসপি) হিসেবে যোগ দেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। আবদুল্লাহ আল-মামুন পুলিশ সদর দপ্তর, মেট্রোপলিটন পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এবং বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটের দায়িত্ব পালন করেছেন।
আবদুল্লাহ আল-মামুন ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর আইজিপি হিসেবে নিয়োগ পান। এর আগে ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর গ্রেড-১ পদোন্নতি পান। চাকরির মেয়াদ পূর্ণ করে গত বছরের ১১ জানুয়ারি তার অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেলে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আরও দেড় বছর পুলিশের সর্বোচ্চ পদে থাকেন। ফলে বিতর্কিত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় তিনিই ছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক।