সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে গত ১৮ নভেম্বর থেকে কয়লা-পাথর আমদানি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। পাথরবাহী ট্রাকে কাদামাটি ও আবর্জনা এবং ওয়েট স্কেলে ওজন জটিলতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা আমদানি বন্ধ রেখেছেন। এতে স্থবিরতা নেমে এসেছে শুল্ক বন্দরটিতে। বিশেষ করে এ কয়দিন আমদানি বন্ধ থাকায় সরকার কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পাথরবাহী ট্রাকে কাদামাটি, আবর্জনা থাকলেও ওয়েট স্কেলে কড়াকড়ি ওজন নির্ণয়ের কারণে কয়লা-পাথর আমদানি থেকে বিরত রয়েছেন তারা। এ অবস্থায় আমদানি অব্যাহত রাখলে পাথরবাহী প্রতি ট্রাকে ন্যূনতম ১০ হাজার টাকা করে লোকসান গুনতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বললেও কোনো সুরাহা পাচ্ছেন না আমদানিকারকরা। যে কারণে বাধ্য হয়ে আমদানি বন্ধ রেখেছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারের রাজস্ব আয়ে অন্যতম সিলেটের ব্যস্ততম তামাবিল স্থলবন্দর।
কিন্তু গত ১৯ দিন ধরে নেই কোনো ব্যস্ততা। ক্ষতির সম্মুখীন ব্যবসায়ীরা কাদামাটি মিশ্রিত কয়লা-পাথর আমদানি বন্ধ রেখে প্রতিবাদ জানালেও ভ্রূক্ষেপ নেই কাস্টমস কর্মকর্তাদের। এতোদিন সুরাহার জন্য কাস্টম কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপে যাননি। কিংবা ওয়েট স্কেলে কড়াকড়ি ওজন নির্ণয় জটিলতায় অবসান ঘটাননি। এরকম বিদ্যমান পরিস্থিতিতে স্থানীয় কয়েক শতাধিক বিনিয়োগকারী আমদানি বন্ধ রাখায় দিনে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে আমদানিকারকরা বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি।
মেসার্স ইন্নী স্টোন ক্রাশারের স্বত্বাধিকারী ও তামাবিল স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী জাহিদ খান বলেন, আমরা সাধারণ ব্যবসায়ীরা স্থলবন্দরের ওজন জটিলতায় মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এ অবস্থায় আমাদের ব্যবসা দূরে থাক, বাড়ি থেকে এনে লোকসানের টাকা দিতে হচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি সমাধানে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো সুরাহা পাইনি।
মেসার্স রেজা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ইলিয়াস উদ্দিন লিপু জানান, ওজন জটিলতায় আমরা পাথর আমদানি বন্ধ রেখেছি। লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেও পাথর আমদানি করতে গিয়ে আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। ওপারে ভারতে কয়লা-পাথরবাহী শত শত ট্রাক লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছে। রপ্তানিকারকরা আমাদের কাছে পণ্যবাহী ট্রাকের ক্ষতিপূরণ দাবি করছে।
তামাবিল কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা তানভির হোসেন জানান, আমাদের কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে। ব্যবসায়ীরা পাথর আমদানি বন্ধ রাখায় এমন পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
তামাবিল স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কয়লা-পাথর আমদানি বন্ধ থাকলেও অন্যান্য পথ আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে। মিডিয়ান পেপার, চাল, মিথানল এসব পণ্য সামগ্রী আমদানি অব্যাহত রয়েছে। অবশ্য এখানকার মূল পণ্য পাথর আমদানি বন্ধ রয়েছে। শুনেছি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আশঙ্কায় কয়লা-পাথর আমদানি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। আমরা কয়লা-পাথর ব্যবসায়ীদের সমস্যার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবেন।