বড়লেখা প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলাধীন পূর্ব মাইজ গ্রামে এক সংখ্যালঘু পরিবারের বাড়ি ভাংচুর, মালামাল লুটপাটের পর বাড়িতে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে দুষ্কৃত কারীরা। বিগত ০৫/০৮/২০২৪ ইং সোমবার দিবালোকে ৩নং নিজ বাহাদুরপুর ইউনিয়নের পূর্ব মাইজগ্রামে অজিত দাসের বাড়িতে এ লোম হর্ষক অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে। মর্মান্তিক ও লোম হর্ষক এ ঘটনায় পূর্ব মাইজগ্রাম এলাকার অন্যান্য নিরীহ বাসিন্দা ও সংখ্যালঘুদের মধ্যে চরম আতংক বিরাজ করছে। এ বিষয়ে বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, পূর্ব, মাইজগ্রামের প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা ও ধর্মীয় লেবাসধারী মৌলানা হাফিজ উদ্দিনের সাথে অজিত দাসের পরিবারের জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। হাফিজ উদ্দিন, ইসলাম উদ্দিন ও ছলিম উদ্দিন গং ভূমি খেকোরা অজিত দাসের ভূ-সম্পত্তি দখল করে নেয় এবং সুকৌশলে হামলা ও মামলা দিয়ে অনুপ দাসকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এতে সন্ত্রাসী হামলার শিকার ঐ ভুক্তভোগী পরিবার ঘরে তালা দিয়ে ভয়ে অন্যত্র শ্রীবাস আশুমে বসবাস করছেন। ৫ আগষ্ট ২০২৪ইং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার পতনের পর দুর্বৃত্তরা অজিত দাসের ঘরে ডাকাতি ও হত্যার উদ্দেশ্যে সোমবার লুটতরাজ চালায়। এসময় সন্ত্রাসীরা ঘরের মূল্যবান আসবার পত্র ভাংচুর শেষে বসত ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়।
দাউ দাউ আগুন ও বিকট শব্দে প্রতিবেশিরা শোর-চিৎকার করতে থাকেন এবং অগ্নিকান্ডের লেলিহান শিখা মূহুর্তের মধ্যেই ঘরের চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং সম্পূর্ণ মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় ইউ/পি মেম্বার সুনাম উদ্দিন মুঠোফোনে বড়লেখা থানা এবং কাঠালতলি ফায়ার সার্ভিস ও দমকল ষ্টেশনে দুর্ঘটনার খবর জানানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এতে প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান।
ধর্মের লেবাসধারী অপশক্তি ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টিকারী এই ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মিশে জামাত-বিএনপির হামলা বলে বলে জোরালোভাবে প্রচার করছে মৌলানা হাফিজ উদ্দিন গংরা। আমাদের প্রতিনিধি-ইউপি চেয়ারম্যান ময়নূল হকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, অজিত দাসের পরিবারের সাথে আওয়ামীলীগ নেতা মৌলানা হাফিজ উদ্দিনের বিরোধ দীর্ঘদিনের। অজিত দাসের বসতগৃহে আগুন দেওয়ার ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত, পূর্ব শত্রুতার জের ধরেই দুর্বৃত্তরা এ ধরনের ন্যাক্কার জনক ঘটনা ঘটিয়েছে বলে চেয়ারম্যান মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, এধরনের জঘন্যতম কর্মকান্ড খুবই নিন্দনীয়। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দায়ী ও দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানাচ্ছি।
আমাদের এ প্রতিবেদক আওয়ামী লীগ নেতা মৌলানা হাফিজ উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে, তাহার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। প্রাক্তন চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে, তিনি বলেন, হিন্দু বাড়ীতে আগুন দেওয়া নিন্দনীয় তবে অজিত দাসের সম্পত্তির একাংশের মালিক মৌলানা হাফিজ উদ্দিন পুরো বাড়িটি দখলে নিতে পরিকল্পিতভাবে তাহার ঘরে আব্দুল আগুন দিতে পারে বলে তিনি ধারণা করছেন। এ ঘটনার পর থেকে এলাকার অন্যান্য সংখ্যালঘু হিন্দুদের মধ্যে চরম আতংক ও ভয় ভীতি বিরাজ করছে।