• ২৭শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৯শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ভাত নরম হওয়ায় বরপক্ষের লঙ্কাকাণ্ড

Daily Jugabheri
প্রকাশিত এপ্রিল ৫, ২০২৫
ভাত নরম হওয়ায় বরপক্ষের লঙ্কাকাণ্ড

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে কনের বাড়িতে ভাত নরম হওয়ায় চেয়ার ভাঙচুর ও ভাতের প্লেট ফেলে দিয়ে লঙ্কাকাণ্ড বাধিয়ে দিয়েছেন বরপক্ষের লোকজন। হামলায় আহত হয়েছেন একজন। বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) উপজেলার পশ্চিম ছাপড়হাটি হাজীপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

 

জানা গেছে, পশ্চিম ছাপড়হাটি হাজীপাড়া গ্রামের প্রবাসী দুখু মিয়ার মেয়ে দিপার বিয়ে হয় রামজীবন গ্রামের আয়নাল হকের ছেলে সবুজ সরকারের (২৮) সঙ্গে। গেটের টাকা নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত হলেও যথারীতি তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর রাত ১টার দিকে প্রায় তিন শতাধিক বরযাত্রীকে খাবার দেওয়া হয়। সন্ধ্যার আগে রান্না করা ভাত গভীর রাতে ভ্যাপসা গরমে নরম হয়ে যায়। আর সেই নরম ভাত পরিবেশন করায় বরপক্ষ বিপত্তি বাধান। একে একে ফেলে দিতে থাকেন ভাতের প্লেট। ভেঙে চুরমার করা হয় চেয়ার।

 

কনের বাবার অনুপস্থিতিতে বিয়ের অনুষ্ঠান তদারকির দায়িত্বে থাকা কনের জ্যাঠা বরপক্ষকে শান্ত করতে গেলে তাকে কিল-ঘুষি মারা হয়। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে বরপক্ষের অধিকাংশ লোক পালিয়ে গেলেও ছয়টি অটোরিকশাসহ আটক করা হয় বর সবুজ মিয়া এবং কয়েকজনকে। আহত কনের জ্যাঠাকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয়রা। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে ফেরেন তিনি।

 

কনের চাচি রুমানা বলেন, গেটের টাকা নিয়ে মূলত ঘটনার সূত্রপাত। টাকা কম দেওয়ায় আমরা বরকে কিছু খাওয়াইনি। পরে বিয়ে হলো। বিয়ের পর কনের ননদ কনের থেকে কানের, গলার ও হাতের সোনার গহনা খুলে নিয়ে সিটিগোল্ডের জিনিস পরিয়ে দেয়। খাওয়ার জন্য বসানো হলো। কিন্তু ভাত নরম হয়েছে বলে তারা খাবেন না। নতুনভাবে ভাত রান্না করে খাওয়ানোর কথা বললেও তারা তা শোনেননি।

 

কনের জ্যাঠা দুলা মিয়া বলেন, সন্ধ্যার দিকে রান্না করা হয়েছে। কিন্তু রাত ১টার দিকে তা খেতে দিলে তারা খাবেন বলে জানান। অনুরোধ করেছি, নতুন করে ভাত রান্না করে খাওয়াব। কিন্তু তারা তা শোনেননি। এতোগুলো লোক বের হয়ে গালাগালি করেছে। আমার কলার ধরে মাটিতে ফেলে মাথায় মেরেছে। মহিলাদেরও মাটিতে ফেলে দিয়েছে।

 

এ বিষয়ে জানতে বর সবুজ সরকার ও বাবা আয়নাল হকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।

 

ছাড়পহাটি ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম দুদু বলেন, ঘটনাটি জানার পর শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে অন্য দুই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ আমি এবং স্থানীয়রা মিলে বসেছিলাম। মীমাংসাপত্রও লিখেছিলাম। সংসার যেহেতু হবে না এবং সময়ও নাই। তাই আজ সকালে বসার কথা ছিল।

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, বৃহস্পতিবার বিয়ে বাড়িতে অপ্রীতিকর ঘটনার বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি আমি। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিষয়টি শান্তিপূর্ণ সমাধান করে দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।

সংবাদটি শেয়ার করুন