
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেছেন, যারা এদেশকে নিয়ে, এ দেশের গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে ছিনিমনি করবে তাদেরকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। দেশের এক ইঞ্চি ভুমি কোনোভাবেই ব্যহাত হতে দেব না।
তিনি সতর্ক করে বলেন, বিগত সতের আঠারো বছর আন্দোলন সংগ্রাম করেছি, প্রয়োজেনে বিএনপি এবং বিএনপি সমমনা বিগত দিনে যারা রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন, তাদের নিয়ে আবারও রাজপথে নামবো।
তিনি আরও বলেন, দেশকে আমরা এগিয়ে নিতে হলে সকলের ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। সেজন্য সংঘাত পরিহার করতে হবে। প্রতিহিংসা পরিহার করতে হবে। সকল ধরনের বিদ্বেষ পরিহার করতে হবে। দেশকে ভালবেসে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সবাইকে নিয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করলে ইনশাআল্লাহ দেশ আরও এগিয়ে যাবে।
শনিবার রাতে মৌলভীবাজার দি মৌলভীবাজার চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র উদ্যোগে জেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় জেলা শহরের প্রাণ কেন্দ্র গীর্জাপাড়াস্থ মাঠে মাসব্যাপী মৌলভীবাজার শিল্প ও বাণিজ্যমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দি মৌলভীবাজার চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি সৈয়দ মুজাম্মিল আলী শরিফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক মেয়র ফয়জুল করিম ময়ুন, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো.মনছুর আলমগীর।
আরিফুল হক চৌধুরী আরও বলেন, শিল্প ও বাণিজ্য মেলা আয়োজন করে মৌলভীবাজার চেম্বার অব কমার্স যে ভূমিকা নিয়েছে এতে উদ্যেক্তাদের মধ্যে একটা উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়। ছোট ছোট ব্যবসায়িদের মধ্যে একটা প্রতিযোগীতা হয়। এখানে মেলায় স্বল্পমূল্যে মার্কেট থেকে অনেক কম দামে পণ্য কিনতে পারি। সাধারণ মানুষের জন্য এধরণের মেলা একটা বড় সুযোগ এনে দেয়।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন, চেম্বারের সাবেক সভাপতি ডা: এম এ আহাদ, চেম্বার পরিচালক তোফায়েল আহমেদ তোয়েল ও সৈয়দ মুনিম আহমেদ রিমন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা ও স্বাগত বক্তব্য রাখেন চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা বিএনপির আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ুন বলেন, সিলেটসহ সিলেটের বিভাগের প্রত্যেকটা জায়গার রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ-কালভার্ট হসপিটাল সব কিছু মরহুম অর্থও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান এর দ্বারা হয়েছে। কেউ অস্বীকার করার সুযোগ নেই। কিন্তু অত্যন্ত দু:খের সাথে বলতে হয়, এ ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের সময় সিলেটে পররাষ্ট্র মন্ত্রী, অর্থ মন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রী সুনামগঞ্জের তাদের কোনো অবদান এ মৌলভীবাজার জেলার মধ্যে নেই। তাদের দায়িত্ব ছিল সাইফুর রহমান তাদের এলাকায় উন্নয়নের ছোঁয়া লাগিয়ে দিয়েছিলেন। তারাও নীতিগতভাবে তাদের কিছু প্রতিদান দেয়া উচিত ছিল, কিন্তু তারা সে প্রতিদান দেয় নাই।
তিনি আরও বলেন, শ্রীমঙ্গলের সখিনা সিএনজি পাম্প হয়ে কালাপুরে বাইপাস রোড হবে। এ বাইপাসে কার্যত মৌলভীবাজারবাসীর কোনও উপকারে আসবে না। এটা শাহবন্দর বা শেরপুর হয়ে বাইপাসটা হওয়া উচিত ছিল। মৌলভীবাজার শহরের অবস্থা খুব ভয়াবহ। আমি মেয়র থাকতে যদি ডিভাইডার না দিয়ে আসতাম আজকে উপজেলার সামনে, রোডস এর অফিসের সামনে, চাদঁনীঘাটের সামনে আটকা পড়তেন। নাহলে মৌলভীবাজার শহর যানজটে স্থবির হয়ে যেতো। অবিলম্বে শাহবন্দর-শেরপুর হয়ে বাইপাস করা প্রয়োজন।
সিলেটের প্রতি কীভাবে বিগত সাড়ে পনের বছর যে অবিচার হয়েছে তা তুলে ধরে ময়ুন আরও বলেন, আজকে দশ বারো বছর ধরে শুনতেছি, কিন্তু এর কাজ কিভাবে শুরু হবে আর কিভাবে শেষ হবে তা আমরা জানি না। এখন পর্যন্ত এর কোনও আলামত দেখা যায় না। তবে মাঝে মাঝে কোথাও রাস্তার গাছ কাটছে দেখা গেলেও কিছু নতুন ব্রীজ হচ্ছে তবে জোরালোভাবে কাজ শেষ হওয়ার কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, আমাদের মৌলভীবাজার জেলাবাসীর আরেকটা প্রাণের দাবী, হবিগঞ্জের মিরপুর থেকে শ্রীমঙ্গল হয়ে মৌলভীবাজার-শেরপুর চারলেনে উন্নতি, মৌলভীবাজার থেকে বড়লেখা পর্যন্ত চারলেনে উন্নতি হতে হবে। এ দাবি না মানা হলে আমরা মৌলভীবাজার বন্ধ করে সকলকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও চেম্বার নেতা আব্দুর রহিম রিপন বলেন, চা শিল্পকে বাঁচাতে অবিলম্বে জলাধার ধারের মাধ্যমে সেচ ব্যবস্থা করার জন্য কম সুদে ঋণের সুযোগ দেয়ার। এছাড়া সরকারকে চা বাগানে‘ টি ট্যুরিজম ’কসসেপ্ট তৈরী করে পর্যটন খাতে সম্ভাবনাময় করে তুলে কর্মসংস্থান বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।