• ৩০শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৫ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৮শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

বড়লেখায় মাস্ক পরতে উদাসীনতা, নেই দৃশ্যমান তদারকি

Daily Jugabheri
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২১
বড়লেখায় মাস্ক পরতে উদাসীনতা, নেই দৃশ্যমান তদারকি

যুগভেরী ডেস্ক :::
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় টিকাদান শুরুর পর থেকে সাধারণ মানু্ষরে মধ্যে মাস্ক ও স্বাস্থ্যবিধির উদাসীনতাকে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ঘরে বাহিরে বেশির ভাগ মানুষই মাস্ক পরছেন না। আর এতে নতুন করে বড়লেখায় করোনার সংক্রমণ বাড়ার আশংকা করছেন বিশেষজ্ঞরা।বেশ কয়েকদিন থেকে বড়লেখায় নতুন কোন করোনা আক্রান্ত রোগী না থাকায় এখন পর্যন করোনা মুক্ত উপজেলা বড়লেখা। তবে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে বা নিয়ম মেনে মাস্ক পরিধান না করলে সংক্রমণ বাড়বে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যবিদরা। এদিকে বড়লেখায় করোনার হার নিম্নমুখী হওয়ার পর থেকে বড়লেখা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে কোন অভিযান পরিচালনা করা হয়নি। সর্বশেষ গত বছরের ২২ নভেম্বর থেকে ২৬ নভেম্বর টানা পাঁচদিন জনসাধারণের মধ্যে মাস্ক ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামীম আল ইমরান ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুসরাত লায়লা নীরা’র নেত্বৃত্বে উপজেলায় ৭টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ১০২টি মামলায় ২৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু এর পর থেকে আর তেমন কোন দৃশ্যমান অভিযান চোখে পড়েনি। এতে করে সাধারণ মানুষের মধ্যে মাস্ক না পরলে জরিমানা গুনতে হবে এমন ভয় কেটে গেছে। যার ফলে অনেকটা যে যার মতো হাট বাজারে চলাফেরা করছে। সরেজমিন উপজেলার পৌরশহরসহ বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে দেখা যায়, শতকরা ৯০ ভাগ মানুষের মুখে মাস্ক নেই। স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে একে অপরের সাথে ঘেঁষাঘেঁষি করে গল্পগুজবে ব্যস্ত । হোটেল রেস্তোরা গুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। কোথাও নিশ্চিত করা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। রাস্তাঘাট শপিংমল থেকে শুরু করে সর্বত্র একই চিত্র। আবার অনেকের কাছে মাস্ক থাকলেও কেউ পরেছেন তুথনিতে কেউবা রেখেছেন পকেটে। মাস্কের প্রতি যেনো চরম উদাসীনতা। এভাবে চললে করোনার সংক্রমন ব্যপক হারে বাড়ার আশংকা সচেতন মানুষের। এছাড়া করোনার সংক্রমন কিছুটা কমার পর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে চলছে দেধারছে খেলাধুলা। অনেক জায়গায় বড় বড় টুর্ণামেন্ট আয়োজন করে হাজার হাজার দর্শকের সমাগম ঘটানো হচ্ছে। এতে করে একজন করোনা রোগীর সংস্পর্শে শত শত জন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশংকা থেকে যায়।আর এসব টুর্ণামেন্টের পৃষ্টপোষকতা করছেন স্থানীয় প্রভাবসম্পন্ন জনপ্রতিনিধিসহ সচেতন বিশিষ্ট জনেরা। স্বাস্থ্যবিধি না মানা বা মাস্ক পরতে কেনো অনিহা এমন প্রশ্নে মাস্ক বিহীনি একাধিক জনসাধারণ বলেন, দেশে করোনা নেই। বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। করোনার টিকা বের হয়ে গেছে তাই করোনার ভয়ও কেটে গেছে। অনেকে ভুলে বাসায় রেখে এসেছি বা পকেটে আছে বলেও জানান।

আব্দুর রহিম নামের এক পথচারী বলেন, চারিদিকে কেউই স্বাস্থ্যবিধি বলেন মাস্ক বলেন কিছুই মানছে না। আর দেশে করোনা রোগী কমছে। আল্লাহ হেফাজতের মালিক। এ বিষয়ে পার্কভিউ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ডা.ফয়েজ আহমদ বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রনে আসলেও মাস্ক পরতে হবে। মাস্কের বিকল্প নেই। আপনাকে টিকা নিলেও নিয়ম মেনে মাস্ক পরতে হবে। বড়লেখায় করোনা মুক্ত হয়ে গেছে এমনটা বলা যাবে না। যে কোন সময় যে কারো মাধ্যমে করোনার সংক্রমন বাড়তে পারে। তাই আমাদের মাস্ক পরতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধিও মানতে হবে। বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.রতœদ্বীপ বিশ্বাস বলেন, করোনার সংক্রমন রোধে মাস্ক ও স্বাস্থ্যবিধি মানতেই হবে। বড়লেখায় করোনার রোগী নেই এটা ঠিক নয় নিরবে নির্ভৃতে অনেকে আক্রান্ত হচ্ছে আবার সুস্থ হচ্ছে। পরিক্ষা করাচ্ছে না বলে ধরা পড়ছে না। আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। বাহিরে বের হলে মাস্ক পরতে হবে এবং বাড়ি আসার পরপরই সাবান দিয়ে হাত মুখ ধৌত করতে হবে। এ বিষয়ে বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সর্দার বলেন, মাস্কের বিকল্প নেই। বাহিরে বের হলে মাস্ক পরে বের হতে হবে এবং সামাজিক দুরত্ব মেনে চলাফেরা করতে হবে। মানুষকে সচেতন করা লক্ষ্যে আমরা মাঠে কাজ করেছি এবং করে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে আমরা মাস্ক সপ্তাহ পালন করেছি। বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামীম আল ইমরান বলেন, করোনার সংক্রমন রোধে অবশ্যই প্রত্যেক জনসাধারণকে মাস্ক পরত হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাফেরা করতে হবে। মানুষক সচেতন করার লক্ষ্যে আমরা নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছি এবং এ ধরনের অভিযান আরও পরিচালনা করা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন