যুগভেরী ডেস্ক ::: তিস্তা চুক্তি দ্রুত স্বাক্ষরে ভারত আন্তরিকভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তবে এর জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময় ভারত জানায়নি বলেও জানান তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শুধু তিস্তা নয় ছয়টি যৌথ নদীর ন্যায্য হিস্যার বিষয় আমাদের প্রধানমন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোরালোভাবে উপস্থাপন করেছেন। জবাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, চুক্তিটি দ্রুত স্বাক্ষরে ভারত আন্তরিকভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ। এ বিষয়ে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
শনিবার (২৭ মার্চ) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে নরেন্দ্র মোদীর দু’দিনের বাংলাদেশ সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ড. মোমেন বলেন, সীমান্তে হত্যার বিষয়টিও আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বলেছেন। তিনি এ সমস্যার সমাধানে তাকে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। এর জবাবে নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, সীমান্তে হাট তৈরি করা গেলে এ সমস্যার অনেকখানি সমাধান হবে।
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের বিষয়ে ভারতের ভূমিকার বিষয়ে তিনি বলেন, ভারত মনে করছে রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়া উচিত। সেটিই নরেন্দ্র মোদী আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন।
ড. মোমেন বলেন, দু’দেশের মধ্যে যেসব অমীমাংসিত বিষয় রয়েছে তার সবগুলোই দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এ সফরের মধ্য দিয়ে দু’দেশের হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে। সে সঙ্গে এ অঞ্চলের উন্নয়নে দু’দেশ একসঙ্গে কাজ করতেও অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছে।
‘এ সফর আমাদের জন্য গর্বের ও গৌরবের। শুধু ভারত নয় বিগত দশ দিনে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা বাংলাদেশ সফর করেছেন। সে সঙ্গে ষাটেরও অধিক দেশ বাংলাদেশকে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে শুভেচ্ছা জানিয়েছে। তারা আমাদের অভাবনীয় সাফল্যে অভিভূত বলেও জানিয়েছেন। সে সঙ্গে আমাদের সঙ্গে কাজ করতেও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। গত দশ দিনের আয়োজন আমাদের বিরাট কূটনৈতিক সাফল্য। ’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সব মিলিয়ে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ সফরে আসার জন্য। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য।
তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদীর এ সফরে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। যেগুলোর মধ্যে রয়েছে- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) এবং ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর অব ইন্ডিয়া (আইএনসিসি) মধ্যে সহযোগিতা, বাণিজ্য বিষয়ক সহযোগিতা ফ্রেমওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা, বাংলাদেশ-ভারত ডিজিটাল সার্ভিস অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং (বিজিএসটি) সেন্টারের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য, কোর্সওয়ার অ্যান্ড রেফারেন্স বুক সরবরাহ, প্রশিক্ষণ বিষয়ক ও রাজশাহী কলেজ মাঠ এবং আশপাশের এলাকায় খেলাধুলার সুবিধা প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
ড. মোমেন বলেন, দুই প্রধানমন্ত্রী ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফর পাওয়ার ইভাকুয়েশন ফ্যাসিলিটিজ অব রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট এবং আশুগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ভারতীয় সেনাদের স্মৃতি ফলকের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সে সঙ্গে ঢাকা ও নতুন জলপাইগুড়ির মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেন মিতালী এক্সপ্রেস, কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়ি রবীন্দ্র ভবনের সম্প্রসারিত উন্নয়ন কাজ, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নতুন তিনটি সীমান্ত হাটের উদ্বোধন করেন দুই প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ২৬ মার্চ সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দু’দিনের সফরে বাংলাদেশে আসেন।