সামিয়ান হাসান, বিয়ানীবাজার :::
রমজানের শুরু থেকেই সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে শুরু হয়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। গত দুই দিন থেকে এই বিভ্রাট পৌছেঁছে অসহনীয় পর্যায়ে। দিনরাত, সকাল-বিকাল যেকোন সময়ে বিদ্যুতের আসা-যাওয়া ভেল্কিবাজিতে অতিষ্ট উপজেলাবাসী। চলমান রমজানের সেহরি, ইফতার ও তারাবির নামাজের সময় এই বিদুৎ বিভ্রাটে চরম বিরক্ত এখানকার মানুষ।
মঙ্গলবার ভোর থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত পৌরশহরের বিভিন্ন অংশে বিদ্যুৎ ছিলনা। এ সময় প্রচন্ড রোদ্রতাপের কারণে রোজাদার মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিয়ানীবাজারে রোজা শুরুর পর থেতে প্রতিদিন অন্তত ৮-১০বার বিদ্যুত আসা-যাওয়া করে।
স্থানীয়ভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কোনো ঘাটতি নেই। এরপরও বিয়ানীবাজার উপজেলাজুড়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণ জানতে চেয়েছেন এখানকার ভূক্তভোগীরা। বিদ্যুৎ খাতে সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের সুফল কারা ভেস্তে দিচ্ছে সেটা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানান তারা। অনেকেই ক্ষোভ ঝাড়ছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও। তারা বলছেন, সময়-অসময়ে বিদ্যুতের এই বিভ্রাট সঞ্চালন লাইনে সমস্যার কারণে হচ্ছে নাকি অন্য কোনো কারণ তা ক্ষতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
করোনার সংক্রমণের কারণে দেশে লকডাউন চলছে। ভ্যাপসা গরম, তীব্র তাপদাহও চলছে। তার ওপর রমজান মাস। এমন পরিস্থিতিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকলে মানুষের কী অবস্থা হবে, সেটা স্থানীয় পল্লী বিদ্যুত কর্তৃপক্ষকে অনুধাবন করার দাবী জানানো হয়েছে।
পৌরশহরের কসবা গ্রামের বাসিন্দা মিলাদ মুহাম্মদ জয়নুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন ধরে বিয়ানীবাজারে ভ্যাপসা গরম পড়ছে। এ অবস্থায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। এতে রমজানের সিয়াম-সাধনায় বিঘ্ন ঘটছে। এ নিয়ে অভিযোগ করতে পল্লী বিদ্যুত অফিসের টেলিফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে মিলছে না সংযোগ।
যদিও বিদ্যুৎ বিভ্রাট বিয়ানীবাজারবাসীর জন্য দীর্ঘদিনের পরিচিত সমস্যা। তবে গত কয়েকদিন ধরে এ সমস্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এ যেন আসা-যাওয়ার খেলা।
সামান্য বৃষ্টি কিংবা বজ্রপাত হলেই উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হচ্ছে। আর ভারি বৃষ্টি হলে তো বিদ্যুতের অপেক্ষায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যাচ্ছে। যার ফলে ইফতার কিংবা তারাবির নামাজের সময় মানুষ কে কষ্ট করতে হচ্ছে বেশি।
বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করছে, ফোন করছে, কিন্তু বিদ্যুৎ কর্মকর্তাগণ বেশিরভাগ সময়ই তাদের নাখোশ করছেন ফোন রিসিভ না করে। রয়েছে পল্লী বিদ্যুত অফিসে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের উদাসীনতা। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সরকারি নাম্বার থেকে শুরু করে সাধারণ অভিযোগ কেন্দ্রের নাম্বারগুলোও প্রতিনিয়ত ব্যস্ত।
ফতেহপুর গ্রামের বাসিন্দা ফখরুল হোসেন লিমন জানান, একদিকে করোনায় ঘরবন্দি অন্যদিকে বিদ্যুতের ভেলকিবাজিতে অতিষ্ট মানুষ। বিশেষ করে ইফতার ও সেহরিতে বিদ্যুৎ আসে আর যায়। তারাবির নামাজেও একই অবস্থা।
এ বিষয়ে বিয়ানীবাজার পল্লী বিদ্যুত অফিসের ডিজিএম বলেন, বিয়ানীবাজার উপজেলা চাহিদার বিপরীতে সমপরিমাণ বিদ্যুতই পাওয়া যাচ্ছে। তবে সঞ্চালন লাইনে সমস্যার কারণে মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ থাকছে না।