• ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

শ্রীমঙ্গলে মাস্ক নেই ক্রেতা-বিক্রেতার মুখে

Daily Jugabheri
প্রকাশিত মে ৫, ২০২১
শ্রীমঙ্গলে মাস্ক নেই ক্রেতা-বিক্রেতার মুখে

নিজস্ব সংবাদদাতা, মৌলভীবাজার :::
স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলছে চায়ের রাজধানী মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিভিন্ন মার্কেটে ঈদের কেনাকাটা। অধিকাংশ ক্রেতা ও বিক্রেতার মুখে নেই মাস্ক। নেই সামাজিক দূরত্ব বজায়ের কোন বালাই। দোকানগুলোতেও নেই কোন স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা। ঝুঁকি নিয়েই চলছে ক্রেতা-বিক্রেতায় জমজমাট ঈদের বাজার। সোমবার বেলা ১২ টার দিকে শ্রীমঙ্গল শহরের বিভিন্ন মার্কেটে গিয়ে স্বাস্থ্যবিধি না মানার এমন দৃশ্য দেখা যায়।
মার্কেটে গুলোতে জনসাধারণের উপস্থিতি যেনো করোনার ভয়কেও জয় করেছে। শহরের স্টেশন রোড, ভানুগাছ রোড, পোস্ট অফিস রোড, হবিগঞ্জ রোড এ অবস্থিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মার্কেট গুলোতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ক্রেতা বিক্রেতা উভয়েই মাক্স ব্যবহারে উদাসীন। কোথাও আবার ধারন ক্ষমতার চেয়ে বেশি মানুষ ঘুরছেন মার্কেটে।
পরিবারকে নিয়ে মার্কেটে আসা সুহেল মিয়া বলেন, ভাই আমাদেরকে বলে কি লাভ। দোকানপাট খোলা তাই ঈদের মার্কেট করতে আসছি। ভুলে বাসায় মাস্ক রেখে আসছি, এখন কিনে নেবো। মার্কেটে তো অনেকেই মাস্ক ছাড়া আসছে, কই এতে ব্যবসায়ীরা তো কিছু বলছেন না।
প্রভাষক জলি পাল বলেন, দেশের অর্থনৈতিক মন্দা কাটাতে সরকার লকডাউন শিথিল করার উদ্যোগ করেছে কিন্ত মানুষের জীবন এবং জীবিকা দুটোই রক্ষা করা অতীব জরুরী। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন হচ্ছে কিনা সেটা সার্বক্ষণিক মনিটর করাও সরকারের দায়িত্বের ভিতর পরে। কারন সংক্রমণ বেড়ে গেলে হাসপাতালে যেমন মিলবে না জায়গা, তেমনি নানাবিধ সংকটে মানুষের মৃত্যুহার বাড়বে কয়েকগুণ।
শহরের খাতুন ম্যনশনের রীগ ফ্যাশনের ব্যবসায়ী পরিতোষ দাশ বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই, কিন্ত মার্কেটে আগত ক্রেতা সাধারণের অনেকেই এ ক্ষেত্রে উদাসীন। সাইফুর রহমান মার্কেটের তপু ফ্যাশনের ব্যবসায়ী শেখ সারোয়ার জাহান বলেন, লকডাউনে আমাদের ব্যবসার ক্ষতি সীমাহীন, দোকান ভাড়া কর্মচারী বেতন সব মিলিয়ে আমরা অসহায়, কিন্ত তারপরও করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ক্রেতা বিক্রেতা উভয়কেই আরো বেশি সচেতন হতে হবে কারণ প্রতিদিন দেশে সংক্রমণ ও মৃত্যুহার বেড়ে চলছে।
সিলেট বিভাগের সাবেক বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ হরিপদ রায় বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কোভিড সংক্রমণের ঝুঁকি বিবেচনায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর নির্দেশনা মোতাবেক বাংলাদেশ সরকার যে নির্দেশনা প্রদান করে তা সকলেই কঠোর ভাবে মেনে চলা উচিত। সাথে প্রশাসনের উচিত সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক জনগণকে উদ্ভুদ্ধ করতে প্রচার প্রচারনা চালিয়ে স্বাস্থ্যবিধির প্রতিপালন করা। এবং শ্রীমঙ্গলে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সকলের সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ করা।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, শুধুমাত্র সরকারি নির্দেশ দিয়ে সংক্রমণ প্রতিরোধ সম্ভব নয়। জনগণের সচেতনতা ও কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে সবাইকেই। এ ক্ষেত্রে ব্যাপক সংক্রমণ ঠেকাতে ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে ক্রেতা বিক্রেতা সবাইকেই সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে। কেউ অমান্য করলে তিনি নিজেই আক্রান্ত হতে পারেন। এবং সকলেরই রয়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। তাই প্রশাসন সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক এ ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগ করতে পারে।
শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুস ছালেক বলেন, লকডাউনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মার্কেট খোলা রাখার সরকারি সিদ্ধান্ত রয়েছে কিন্ত এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করতে হবে। আমরা বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি স্থানীয় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও ব্যবসায়ীদের সাথে, কিন্ত সরকারি নির্দেশনা না মেনে যারা ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করবেন তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করবো।

সংবাদটি শেয়ার করুন