যুগভেরী রিপোর্ট ::::
সিলেটে আতংক ছড়াচ্ছে ভারতীয় ধরণ। যতো সময় যাচ্ছে করোনার ভারতীয় ধরণ ততো আতঙ্ক ছড়াচ্ছে সিলেটে। সিলেট বিভাগের তিনদিক ভারত সীমান্তঘেঁষা হওয়ায় করোনার বিধ্বংসী এই ধরণ নিয়ে আতঙ্ক বাড়ছে। এর মধ্যে ভারত ফেরত করোনা আক্রান্ত এক নারীর মৃত্যু সেই আতঙ্ক বাড়িয়ে দিয়েছে অনেক গুণ। যদিও ওই নারী করোনার ভারতীয় ধরণে (ভ্যারিয়েন্ট) আক্রান্ত ছিলেন কি-না তার রিপোর্ট এখনো আইইডিসিআর থেকে পাওয়া যায়নি। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীলরা বলছেন, মানুষকে আরো বেশি সচেতন করা না গেলে করোনার অতি সংক্রমণশীল এই ধরণ সিলেটে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
সিলেট বিভাগের চার দিকের মধ্যে তিন দিকেই ভারতীয় সীমান্ত। দুইপাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে রয়েছে সুদৃঢ় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন। রয়েছে বেশ কয়েকটি স্থলবন্দরও। যদিও লকডাউনের কারণে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সবগুলো সীমান্তপথ। এরপরও করোনার ভারতীয় ধরণ নিয়ে স্বস্তিতে নেই সিলেটের মানুষ। ভারতের মেঘালয় সীমান্ত দিয়ে পণ্য আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকলেও আসামের সাথে যুক্ত স্থলবন্দরগুলো চালু রয়েছে। তাই ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাকের চালকদের মাধ্যমে এই ভাইরাস সংক্রমনের আশঙ্কা করছেন অনেকে। এছাড়া সিলেটের সবকটি সীমান্তে চোরাকারবারীদের তৎপরতা বাড়িয়ে দিয়েছে এই শঙ্কা। চোরকারবারীরা ভারতের ভেতরে প্রবেশ করে নানা জাতের পণ্য নিয়ে দেশে ফিরছেন। তাদের মাধ্যমেও করোনার ভারতীয় ধরণ সিলেটে বিস্তারের আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে, গত ১২ মে ভারত ফেরত এক নারী করোনা আক্রান্ত হয়ে সিলেটে মারা গেছেন। গত ৩ মে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার আসমা বেগম নামের ওই নারী বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। কিডনি রোগে আক্রান্ত ওই নারীকে প্রথমে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যশোর বক্ষব্যাধি হাসপাতালে কোয়ারেন্টিনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ৯ দিন চিকিৎসার পর তাকে বিশেষ ব্যবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে নমুনা পরীক্ষায় তার করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে।
এরপর গত ১২ মে সকালে তাকে খাদিমনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইসোলেশনে পাঠানো হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ফের তাকে ওসমানীতে ভর্তি করা হয়। দুপুরের দিকে তিনি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর তার নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত নমুনার রিপোর্ট পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেটের সহকারী পরিচালক ডা. নূর এ আলম শামীম। ফলে ওই নারী করোনার ভারতীয় ধরণে আক্রান্ত হয়েছিলেন কি-না তা এখনো জানা যায়নি। এদিকে, ইতোমধ্যে ভারতফেরত আরেক ব্যক্তি করোনা পজেটিভ হিসেবে সনাক্ত হয়েছেন। তাকেও আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেটের সহকারী পরিচালক ডা. নূরে আলম শামীম জানান, যেহেতু সিলেটের তিনদিকে ভারতীয় সীমান্ত, তাই ঝুঁকিটা একটু বেশিই। তবে স্বস্তির খবর হচ্ছে- এখনো সিলেটের সীমান্তঘেঁষা ভারতের আসাম ও মেঘালয় রাজ্যে করোনার নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ খুব বেশি পরিলক্ষিত হয়নি। তবে মানুষকে সচেতন করা না গেলে যে কোনভাবে এই সংক্রমণ সিলেটেও দেখা দিতে পারে।