যুগভেরী ডেস্ক ::: সিলেট নগরীর সুবিদবাজারে ২ একর ৬৮ শতক জায়গার জাল দলিল তৈরি করে প্রতারণার অভিযোগে এসএমপি’র কোতয়ালি থানায় ২ জনের বিরুদ্ধে (মামলা নং ৩(৯)২১ইং) দাখিল হয়। মামলা দাখিলেরপর গত বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) এসএমপির এয়ারপোর্ট থানার সুবিদবাজার প্রান্তিক-১৬ এর মৃত ডা. আব্দুল বাকি খানের ছেলে মো. আব্দুল মালিক হুমায়ুন জাল আনরেজিস্ট্রি বাটোয়ারা দলিল জব্দের আবেদন করেন আদালতে।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটের অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মোমেন জাল আনরেজিস্ট্রি বাটোয়ারা দলিল জব্দের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই তজম্মুল আলী-কে। আর আদেশের অনুলিপি অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কোতয়ালি থানাকেও প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন।
আদালতের নির্দেশ থাকা স্বত্তেও তদন্তকারি কর্মকর্তা দলিল জব্দ করছেন না বলে অভিযোগ করেছেন বাদী হুমায়ুন।তবে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই তজম্মুল আলী জানিয়েছেন দলিল জব্দ ও এজাহার নামীয় পলাতক আসামীকে গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।
হুমায়ুনের মামলায় এজাহার নামীয় আসামীরা হলেন কোতয়ালি থানার সুবিদবাজার দোয়েল-১৯ এর বাসিন্দা মৃত আব্দুল হাই খানের ছেলে এনামুল হক খান ও সাগরদিঘিরপার লাভলী রোড নির্ঝর-২ এর আব্দুল মুকিত চৌধুরীর ছেলে ফাহিম আহমদ চৌধুরী। এরমধ্যে এনামুল হক খানক গত সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বৃদ্ধ ও অসুস্থ দেখিয়ে আদালতে আত্মসর্ম্পণ করে জামিন চাইলে, আদালত জামিন প্রদান করেন।
মো. আব্দুল মালিক হুমায়ুন মামলায় উল্লেখ করেন, তার বাবা ডা. আব্দুল বাকি খান ও এনামুল হক খানের পিতা মৃত মৌলভী আব্দুল হাই খান যৌথভাবে ১৯৫৩ সালের ২৩ অক্টোবর ২৪৪৩/৫৩ রেজিস্ট্রি দলিলে সাফ কবালায় জায়গা ক্রয় করে সমান অংশে ভোগ দখল করে আসছেন। তাছাড়া বর্তমান সেটেলমেন্ট জরিপেও তা বলবৎ রয়। বর্তমানে ওই জায়গাটির সমানভাগে সীমানা চিহিৃত করে দেয়ার জন্য এনামুলকে বারবার বলেন হুমায়ুন। কিন্তু এনামুল তা করে দেননি। উল্টো ২০১০ সালে এনামুল ওই জায়গায় ডুপ্লেক্স বিল্ডিং তৈরি কাজ শুরু করলে হুমায়ুন বাধা প্রদান করেন। ২০১৫ সালে খান প্যালেস এর ৪র্থ তলার কাজেও বাধা দেন হুমায়ুন।এছাড়া ওই সালে কুইন্স হেলথ কেয়ার নামে ১৪ তলা বিশিষ্ট ভবনে কাজ শুরু করেন ফাহিম আহমদ চৌধুরী। ওই কাজে ২০২০ সালের ২০ ও ৩০ আগষ্ট এবং সর্বশেষ ৭ সেপ্টেম্বর বাধা প্রদান করেন হুমায়ুন। তখন এনামুল ও ফাহিম হুমকি দিয়ে বলেন সেখানে হুমায়ুনদের কোন জায়গা নেই। এরপর বাটোয়ারার জন্য সিলেটের যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতে মামলা নং ১৬৭/২০ দাখিল করেন হুমায়ুন। তখন আদালত বিল্ডিং নির্মাণে স্থিতাবস্থার আদেশ দেন। ওই মামলায় এনামুল ও ফাহিম ১৯৬৮ সালের ৮ নভেম্বর এর একটি আনরেজিস্ট্রার্ড বাটোয়ারানামা দাখিল করেন। বাটোয়ারানামার ওই আনরেজিস্ট্রার্ড দলিল সংগ্রহ করেন হুমায়ুন। এতে দেখেন এনামুল তার বাবার নামে একক ভ’মি উল্লেখ করেন। তখন হুমায়ুন তার বাবার পাসপোর্ট ও হাতের লেখা চিঠিসহ বিভিন্ন কাগজে বাবার ইংরেজি হাতের লেখা দস্তখত দেখেন। আর বাটোয়ারানামায় যে বাংলা দস্তখত দেখানো হয়েছে, সে দস্তখতের সাথে কোন মিল নেই। তাছাড়া হুমায়ুনের বাবা সকল সময় ইংরেজিতে দস্তখত করতেন। এতে বুঝা যায় জাল দস্তখত করে জালিয়াতির মাধ্যমে এনামুল ও ফাহিম জাল বাটোয়ারানামা তৈরি করে তা বিভিন্ন জায়গায় প্রর্দশন করছেন।
মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই তজম্মুল আলী বলেন, তিনি দলিল জব্দ ও পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
মামলার বাদী মো. আব্দুল মালিক হুমায়ুন জানান, জাল আনরেজিস্ট্রার্ড বাটোয়ারানামার ব্যাপারে প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে দুইজনের নাম উল্লেখ করে আদালতে সিআর মামলা নং৭২২/২১ ইং দাখিল করলে, আদালত তা গ্রহণ করে এফআইআর এর জন্য ওসি কোতয়ালি থানাকে নির্দেশ প্রদান করেন। থানা তদন্ত সাপেক্ষে (মামলা নং ৩(৯)২১ইং) রের্কড হয়। তাছাড়া আদালত জাল দলিল জব্দের আদেশ দিলেও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দলিল জব্দ করছেন না। আর আসামী প্রকাশ্যে ঘুরলেও তাদেরকে গ্রেফতার করছেন না এসআই তজম্মুল আলী।