যুগভেরী ডেস্ক ::: এক অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখলো সিলেট। সবার চোখ কালো কাপড়ে বাঁধা। আবক্ষ অনাবৃত। বুকে প্লে-কার্ড। তাতে লেখা রয়েছে ‘আমাকে নাও, বাংলাদেশ দাও’। ২০২১ খ্রিস্টাব্দে ২১ টি প্রাণের বিনিময়ে ২১ কোটি মানুষের বাসযোগ্য স্বদেশ এবং মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ চাই-এই বার্তা তাদের। কুমিল্লা কাণ্ডকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে এই বার্তা ছড়িয়ে দিতেই বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) বিকেল ২ টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদমিনার প্রাঙ্গণে জড়ো হন তাঁরা। সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন সিলেট জেলা শাখার ২১ জন সদস্য আয়োজন করে অনশন কর্মসূচীর। অভূতপূর্ব এই কর্মসূচীর প্রতি একাত্বতা প্রকাশ করেন সিলেটের মুক্তিযোদ্ধা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন সিলেট জেলা আহবায়ক কমিটির সদস্য ও বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক জন এনামুল মুনীরের সভাপতিত্বে ও আনন্দ স্টেশন সিলেটের সমন্বয়ক সন্দীপন শুভ এর সঞ্চালনায় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন কর্মসূচীর সমন্বয়ক ও সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন সিলেট জেলা সদস্য সচিব দেবব্রত রায় দিপন। কর্মসূচীর সমন্বয়ক দেবব্রত রায় দিপন বলেন, ২১ কোটির দেশকে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে ফিরিয়ে নিতে ২১ অক্টোবর অনশন কর্মসূচীতে যোগ দিয়েছেন ২১ জন। সাম্প্রদায়িক এই হামলাকে তিনি পরিকল্পিত উল্লেখ করে বলেন, এই তাণ্ডব যজ্ঞের মাধ্যমে দেশকে বিবস্ত্র করার মিশন হাতে নিয়েছে এশটি চক্র। মায়ের বিবস্ত্র রূপ কোনো সন্তান চোখে দেখতে পারে না। তাই চোখ বেঁধে এই কর্মসূচীতে অংশ নিতে দেশমাতৃকার যে সকল সন্তান পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা। সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বিজিত চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই এদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায়, তখনই ওঁৎ পেতে থাকা একটি গোষ্ঠী দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। এরা সুকৌশলে দেশকে অস্থিতিশীল করার মিশন হাতে নেয়। যার ধারাবাহিকতায় নির্বাচন কালীন এবং পূজোর সময়ে সাম্প্রদায়িক হামলার মাধ্যমে লুটপাটে অংশ গ্রহণ করে। তিনি বলেন, দেশের চিহ্নিত এই ষড়যন্ত্রীকারীদের বিরুদ্ধে সকলকে সজাগ থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হবে। সভায় কর্মসূচীর প্রতি একাত্বতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট জেলা ইউনিট কমান্ডার সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বিজিত চৌধুরী, ডা.রসময় ভট্টাচার্য,ঐক্য ন্যাপ সিলেট জেলা সদস্য ফজলুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা পান্না লাল রায়, বাংলাদেশ যুব মৈত্রি কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হিমাংশু মিত্র, জয়বাংলা সাহিত্য পরিষদ সিলেট জেলা সভাপতি অজিত রায় ভজন, সিলেট জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নাজমুল হোসেন,কবি শ্যামল কান্তি সোম,অধ্যাপক জান্নাত আরা খান পান্না, প্রভাষক মিহির মোহন, শিক্ষক হিমেল রায়, বি পি দেব শুভ, সাবেক স্বাস্থ্যকর্মী দীপালী রায়, নারী উদ্যোক্তা ও সংগঠক পপি দে, সেন্টুরঞ্জন কর,কবি অজয় বৈদ্য অন্তর, উদয়ন দাস পুরকায়স্থ, শিল্পী জেবেল রেজা, এডভোকেট তমাল চন্দ্র নাথ, দেবশ্রী পরমা, দেবদ্যুতি প্রণমী ও ছোট্টো সোনামনি দীপান্বিতা দীপা। এদিকে, কর্মসূচীর এক পর্যায়ে সকাল থেকে অনশনে থাকা সাংবাদিক দেবব্রত রায় দিপনের ৬ বছরের মেয়ে দীপান্বিতা দীপার মুখে জুস দিয়ে অনশন কর্মসূচী আপাতত স্থগিত করেন।