যুগভেরী ডেস্ক
বর্ণাঢ্য আয়োজনে সিলেট সেনানিবাসে পালিত হয়েছে মহান সশস্ত্র বাহিনী দিবস। দিবসটি উপলক্ষ্যে সেনাবাহিনীর পডক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধণা প্রদান করা হয়েছে।
রোববার বিকেলে সিলেট সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও সিলেট এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল হামিদুল হক।
এতে স্বাগত ভাষণের শুরুতেই তিনি স্মরণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এবং শ্রদ্ধা জানান অগণিত বীর শহীদদের ও সাহসী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাদের আত্মত্যাগে অর্জিত হয়েছে কাঙ্খিত স্বাধীনতা। বিশেষ করে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় সিলেটবাসীর অসীম সাহসিকতা, সহযোগিতা এবং বীরত্বপূর্ণ অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সিলেট অঞ্চলের বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ সকল বীর শহীদদের প্রতি জানান বিনম্র শ্রদ্ধা। এছাড়াও তিনি আগত সকল মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান এবং অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে একে মহিমান্বিত করার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
প্রধান অতিথি তার ভাষণে দেশ উন্নয়নে সশস্ত্র বাহিনীর নিরলস প্রচেষ্টার কথা ও দেশের সুনাম বৃদ্ধিতে সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের কঠোর আত্মত্যাগের চিত্র তুলে ধরেন। পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী জাতীয় পর্যায়ে যে কোন দুর্যোগ মোকাবেলা, অবকাঠামো নির্মাণ, আর্তমানবতার সেবা, পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাস দমন, জঙ্গী সমন, বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা এবং বিভিন্ন দেশগঠনমূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে দেশের সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখছে। এছাড়াও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে।
তিনি আরো বলেন, সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিকায়ন, সম্প্রসারণ ও যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে আধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ সামরিক সরঞ্জাম দিয়ে আরও শক্তিশালী করতে বর্তমান সরকার সবসময় আন্তরিক রয়েছে।
এ অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্যবৃন্দ, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং অন্যান্য অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা সম্মিলিতভাবে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সাঁড়াশি আক্রমন শুরু করে। এর ফলে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমাদের মহান বিজয় ত্বরান্বিত হয়। ১৯৭১ সালের সেই বীর সেনানিসের প্রতি শ্রদ্ধাস্বরূপ প্রতি বছর ২১ নভেম্বর যথাযথ মর্যাদা ও সম্মানের সাথে সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসেবে।
প্রতিবছর এ দিনটি নানা আয়োজনে উদযাপন করা হলেও গত বছর করোনাকালীন পরিস্থিতির কারণে এ দিবসটি উদযাপন করা সম্ভব হয়নি। তবে এ করোনাকালীন পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ার কারণে দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং একই ধারাবাহিকতায় আজ সিলেট সেনানিবাসে একটি মনোমুগ্ধকর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।