সিলেটের জৈন্তাপুরে নতুন পর্যটন কেন্দ্র ডিবির হাওরের লাল শাপলার বিল
মোঃ আব্দুল হালিম, জৈন্তাপুর (সিলেট) পান-পানি-নারী এই তিনে জৈন্তাপুরী। সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার এই প্রবাদ বাক্য যুগ যুগ ধরে মানুষের মুখে উচ্চারিত হয়ে আসছে। মেঘালয়ের পাদদেশে উত্তর সিলেটের সীমান্তবর্তী এই জনপদে রয়েছে কয়েক শ বছরের পূরনো ইতিহাস- ঐতিহ্য ছাড়াও বেশ কয়েকটি দর্শণীয় স্থান। সিলেট অঞ্চলের হাওর ও বিলগুলোও বেশ নামকরা। এমনই একটি জায়গা সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলায় সাম্প্রতিক সময়ে দারুনভাবে পর্যটক আকৃষ্ট করছে। জৈন্তা রাজ্যের রাজা রাম সিংহের স্মৃতিবিজড়িত ডিবির হাওরে রয়েছে ইয়াম বিল, হরফকাটা বিল ও কেন্দ্রী বিল। এই বিলগুলোর অবস্থান বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী মেঘালয়ের পাদদেশে। রাজা রাম সিংহের বিলগুলো এখন রূপ নিয়েছে লাল শাপলার রাজ্যে। বিলে ফুটন্ত অজস্্র লাল শাপলা, লতা-পাতা আর গুল্মেভরা বিলের পানিতে হাজার হাজার লাল শাপলা হার মানায় ভোরের সূর্যের আলোকেও। সবুজ পাতার আচ্ছাদনে ঢাকা পড়ে আছে বিস্তীর্ণ এই জলরাশি। ভোরের আলোয় লাল শাপলার হাসি আরো আলোকিত করে দেয় বিলগুলোকে। প্রকৃতি তার নিজ হাতে লাল শাপলার হাসিতে সাজিয়ে নিয়েছে এই জনপদের জলাশয় ও বিলগুলোকে। বেড়াতে আসা যে কোন বয়সী ভ্রমনপিপাসুদের মনের দুয়ার খুলে দেবে এই শাপলা বিল। চোখ জুড়ানো মন মাতানো অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি এখন পর্যটকদের পদভারে মুখরিত। শরতের শেষ আর শীতের আগমন এটাই শাপলা বিলে লাল শাপলা উপভোগের উপযুক্ত সময়। রক্তিম শাপলা ফুটে জানান দিচ্ছে পর্যটকদের আগমনী বার্তা। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসতে শুরু করেছেন পর্যটনপ্রেমী মানুষ। তবে ঘুমন্ত নয় ফুটন্ত শাপলা দেখতে হলে শাপলা বিলে পৌছাতে হবে ভোর বেলা। কারন সূর্যের আলো উঠার আগেই ফুটন্ত শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করার মজাই আলাদা। পর্যটকদের পাশাপাশি শাপলা বিলে আসতে শুরু করে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি। পাখির কলতানে মুখরিত হয়ে উঠে বিল সহ পুরো এলাকা। এ সময় পূর্ব আকাশে সূর্যের আলোকেও হার মানায় বিলগুলোর ফুটন্ত রক্তিম শাপলা। রাতের ¯িœগ্ধতায় ফুটে থাকা লাল শাপলা দিনের আলোয় পাপড়ি দিয়ে অনেকটা লুকায়িত রাখে নিজেকে। হরফকাটা ও ডিবি বিলের মধ্য ভাগে রয়েছে রাজা রাম সিংহের সমাধিস্থল। এর কাছাকাছি দেখা মিলে মেঘালয় পাহাড়ে খাসিয়া সম্প্রদায়ের বসবাস এবং বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে পান-সুপারীর বাগান। এ যেনো প্রকৃতির বুকে শিল্পীর রং তুলিতে আকাঁ এক নকশিকাঁথা। প্রায় ৯শ একর জমি নিয়ে দখল করে আছে লাল শাপলার এই বিলগুলো। পর্যটন এলাকা হিসেবে খ্যাত সিলেটের দর্শণীয় স্থানের তালিকায় এখন নাম দখল করে নিচ্ছে এই শাপলা বিল। যেভাবে যাবেন শাপলা বিলে। সিলেট শহরের কদমতলী বাস ষ্টেশন থেকে জাফলংগামী বাসে উঠলে নামতে হবে জৈন্তাপুর উপজেলা সদরে। তার পর সেখান থেকে অটোরিক্স সহ যে কোন যানবাহন নিয়ে সিলেট তামাবিল মহা-সড়কের কদমখাল নামক স্থান থেকে হাতের ডান দিকের রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করলে মাত্র ১ কিলোমিটার পরেই পৌছে যাবেন লাল শাপলার বিলে।