সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ
সিলেটে পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে প্রভাবশালীদের হুমকি-ধমকির শিকার হচ্ছেন এক ব্যবসায়ী। এমনকি প্রভাবশালী সহযোগী কিছু ব্যবসায়ীদের কারনে দেউলিয়া হওয়ার পথে ঐ ব্যবসায়ী। গতকাল রোববার সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন মেসার্স কাদির এন্টারপ্রাইজ এবং গেটওয়ে ইন্টারন্যাশনালের স্বত্তাধিকারী দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কামালবাজার ইউনিয়নের কাড়ারপার গ্রামের বাসিন্দা হাজী আব্দুল হাসিমের পুত্র আব্দুল কাদির।
লিখিত বক্তব্যে ব্যবসায়ী আব্দুল কাদির বলেন, সিলেট নগরীর বন্দরবাজার মহানগর ফরেন এজেন্সি লিমিটেড এর স্বত্তাধিকারী মো. সালা উদ্দিন আহমদ সামু এবং নাছির উদ্দিনের সাথে প্রায় ১০ বছর আগে ব্যবসায়িক সূত্রে আমার পরিচয় হয়। এর মধ্যে নাছির উদ্দিন সিলেট সদর উপজেলার খাদিমপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা। মো. সালা উদ্দিন আহমদ সামু হলো নাছির উদ্দিনের শ্যালক। পরিচয়ের পর থেকে তারা আমার নিকট থেকে নগদে ও চেকে পাথর ক্রয় করে । এরপর হঠাৎ একদিন নাছির এসে আমাকে বলে তাদের প্রচুর পাথর লাগবে। ব্যবসায়িক সূত্রে সম্পর্ক ভালো থাকায় সরল বিশ^াসে আমি তার কথায় আলাপ আলোচনা সাপেক্ষে পাথর দিতে রাজী হই। এর মধ্যে গত ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম দফায় বেশ কিছু পাথর আমি তাদেরকে সরবরাহ করি। ধারাবাহিকভাবে তারা ২০১৮ সালের মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপে আমার কাছ থেকে প্রায় ৫২ লাখ টাকার পাথর ক্রয় করেন। এর মধ্যে বিভিন্ন তারিখে নগদে তারা আমাকে প্রায় ২৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করে। বাকী ২৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার দুটি চেক তারা আমাকে প্রদান করে। কিন্তু এ দুটি চেকই ডিজনার হয়ে আসে। এরপর সামু ও নাছির আমাকে নগদে টাকা দিয়ে দেবে বললেও পরবর্তীতে কেউই আমার ফোন রিসিভ করেনাই। আরো কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর ফোন রিসিভ করলেও তারা আমাকে হুমকি দিয়ে বলে টাকা চাইলে প্রাণে মেরে ফেলবে অথবা গুম করে ফেলবে। তাদের অব্যাহত হুমকির কারনে আমি অনেকটা ভয় পেয়ে যাই। কোন উপায়েই টাকা উদ্ধার করতে পারিনি। এমনকি ব্যবসায়ী ড. নুরুল ইসলাম বাবুলসহ অন্যান্য স্বাক্ষীদের উপস্থিতিতে তাদেরকে আমি পাথর দিয়েছিলাম। তারা অনেকবার চেষ্টা করেছেন আমার টাকাটি উদ্ধার করে দিতে। বিভিন্ন তারিখে স্বাক্ষীগণ আমাকে সাথে নিয়ে সামু ও নাছিরের বাসায় যান। এ সময় তারা টাকা পরিশোধ করে দিতে স্বাক্ষীগণের নিকট থেকে সময় চেয়ে নেয়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হলে ও তারা আমার টাকা পরিশোধ করেনি এমনকি উল্টো ভয়ভীতি দেখায়। শেষ পর্যন্ত মামলার স্বাক্ষীগণকে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে বলে সামু ও নাছির। এক পর্যায়ে নিরুপায় হয়ে আমি গত ২৮ সেপ্টেম্বর সিলেটের মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট ১ম আদালতে মামলা দায়ের করি। মামলাটি তদন্তের জন্য আদালত পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আব্দুল কাদির আরো বলেন, মামলা দায়েরের খবর পেয়ে সামু ও নাছির আমার উপর মারাত্মকভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। তারা প্রভাবশালী লোকদের সহযোগিতায় আমাকে প্রাণে মেরে ফেলতে উঠেপড়ে লেগেছে। মামলা প্রত্যাহার করে নিতে বিভিন্ন মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করছে। হুমকি দিয়ে বলেছে মামলা উঠিয়ে না আনলে তারা আমাকে এবং আমার স্ত্রী, সন্তানদেরকে প্রাণে মেরে ফেলবে । এমনকি ২৩ অক্টোবর শুক্রবার রাতে তারা ৮/৯ জন সন্ত্রাসী আমার গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে হামলার চেষ্টা করেছে। রাত আনুমানিক ১২ টার দিকে সন্ত্রাসীরা আমার বাড়ির কেসি গেইটে গিয়ে ডাকাডাকি করলে আমার ভাই ঘর থেকে বের হয়ে আসে। এ সময় আমার ভাই তাদের পরিচয় জানতে চায় এবং কি জন্য এসেছেন জিজ্ঞেস করলে সন্ত্রাসীরা উত্তেজিত হয়ে বলে, তোর ভাই আব্দুল কাদির কোথায়? গেইট খুলে দে। গেইট না খুলে দিলে সন্ত্রাসীরা বলে, নাসির ও সামুর উপর দায়েরকৃত মামলা তুলে নিতে তোর ভাইকে বলবি। নয়তো তোর ভাই এবং তার স্ত্রী সন্তানকে উঠিয়ে নিয়ে মেরে ফেলবো। এতে আমার ছোট ভাই আব্দুর রকিব ভয় পেয়ে যায় এবং চিৎকার শুরু করে। এক পর্যায়ে গালিগালাজ করে তারা চলে যায়।
কাদির বলেন, এমন পরিস্থিতিতে তার জীবন সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ব্যাপারে সংষিøষ্ট সকল মহলের সহযোগিতা কামনা করছি। প্রেস-বিজ্ঞপ্তি।