
দক্ষিণ সুরমা প্রতিনিধি :
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার লালাবাজারে দিন দুপুরে এক যুবককে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে গাড়িতে তুলে নিলেও কোনো থানায়ই তার সন্ধান মিলছে না। এ নিয়ে উদ্বেগ ও অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে তার পরিবারে।
অপহৃত যুবকের নাম মো. রায়হান আহমদ মনি(২৭)। তিনি দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লালাবাজার এলাকার লক্ষীপুর গ্রামের মো. ফিরোজ মিয়ার ছেলে।
জানা যায়, শনিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে সিলেট শহরে যাওয়ার পর ব্যক্তিগত কাজ শেষ করে বাড়ি উদ্দেশে রওয়ানা হন মো. রায়হান আহমদ মনি। এরপর লালাবাজারে এসে বাজার করার জন্য গাড়ি থেকে নামেন। এরই মাঝে একটি সাদা মাইক্রোবাস তার সামনে এসে থামে। সাথে সাথে গাড়ি থেকে অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন সাদা পোশাকধারী যুবক নেমে তাকে ঘিরে ফেলে। কারণ জানতে চাইলে তারা ডিবি পুলিশের লোক পরিচয় দিয়ে জোর পূর্বক তাকে গাড়িতে তুলে ফেলে।
দৃশ্যটি আশ-পাশের অনেকেই দেখেছেন। তারা বিষয়টি জানার জন্য এগিয়েও আসেন এবং ডিবি পরিচয়ধারীদের সাথে কথাও বলেন। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই তারা মো. রায়হান আহমদ মনিকে উঠিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে বিন্দুমাত্র তথ্য উদঘাটন করতে পারেননি।
অপহরণকারীদের সাথে কথা হয়েছে এমন কয়েকজন জানান, ‘আমরা দৃশ্যটি দেখে এগিয়ে আসি এবং কারণ জানার চেষ্টা করি। কিন্তু পুলিশের পরিচয়দানকারীরা এতটাই চালাক যে, তারা আমাদের কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে চায়নি। সব প্রশ্নের জবাবে তারা শুধু এইটুকু বলেছে- ‘একটি মামলার তদন্ত সংক্রান্ত বিষয়ে বয়ান নেওয়ার জন্য মো. রায়হান আহমদ মনিকে থানায় নেওয়া হচ্ছে। তাকে গ্রেফতার করা হয়নি।’
এদিকে মো. রায়হান আহমদ মনির ছোট ভাই ইমরান আহমদ জানান, ‘আমার ভাইকে অপহরণ করা হয়েছে। কোনো কারণে যদি তাঁকে গ্রেফতার করা হতো, তাহলে তাঁকে দক্ষিণ সুরমা থানায় পাওয়া যেতো কিংবা দক্ষিণ সুরমা ডিবি অফিসে সেই তথ্য থাকতো। কিন্তু আমরা পাইনি।’
তিনি বলেন, ‘সাদা পোশাকধারী একদল লোক ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে আমার ভাইকে তুলে নিয়ে গেছে এমন তথ্য পেয়ে আমি আমার মামাকে ফোন করে দ্রুত দক্ষিণ সুরমা থানা ডিবি অফিসে পাঠাই। তারা কেউ সন্ধান দেয়নি। এতে আমি সন্দিহান যে, আমার ভাইকে অপহরণ করা হয়েছে। আমার পরিবার এখন উদ্বেগ ও অজানা আতঙ্কে ভুগছে।
এব্যাপারে জানতে চাইলে দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম জানান, মো. রায়হান আহমদ মনি নামের কোনো যুবককে গ্রেফতারের বিষয়ে তিনি জানেন না। এই নামের কারো বিরুদ্ধে তাঁর থানায় কোনো অভিযোগ নেই। তাছাড়া, ডিবি পুলিশ ওই থানা এলাকায় কোনো অভিযান চালাতে গেলে তাঁকে ইনফর্ম করার কথা। কিন্তু সেরকম কিছুই হয়নি।