• ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২০শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সিলেটের গোলাপগঞ্জে দোকানে হামলা ও ভাংচুর, আহত ১

Daily Jugabheri
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৩
সিলেটের গোলাপগঞ্জে দোকানে হামলা ও ভাংচুর, আহত ১

স্টাফ রিপোর্টার : সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ চৌমুহনীতে এলাকায় শওকত ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে ছাত্রলীগ ক্যাডাররা ভাংচুর ও হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন দোকানের স্বত্ত্বাধিকারী শওকত হোসেন। রাজনৈতিক শত্রুতার জের ধরে গতকাল বিকেলে এ হামলা চালানো হয় বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেলে ছাত্রলীগ ক্যাডাররা গোলাপগঞ্জ চৌমুহনী এলাকার ‘শওকত ডিপার্টমেন্টাল স্টোর’ নামক দোকানে গিয়ে ছাত্রশিবির নেতা সারোয়ার হোসেন মুর্শেদকে খুঁজতে থাকে। তখন সারোয়ার হোসেন মুর্শেদের পিতা শওকত হোসেন তাদেরকে জানান, তার ছেলে যুক্তরাজ্যে থাকেন। এতে ছাত্রলীগ ক্যাডাররা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করে। হামলায় গুরুতর আহত হন তিনি। এসময় ছাত্রলীগ ক্যাডাররা দোকানে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। দোকানের মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন আহত শওকত হোসেনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। তার মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে এবং আঙ্গুল ভেঙ্গে গেছে বলে জানা গেছে। তবে তিনি শঙ্কামুক্ত রয়েছেন।
এ ব্যাপারে আহত শওকত হোসেন জানান, তার ছেলে সারোয়ার হোসেন মুর্শেদ স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে যুক্তরাজ্যে গিয়ে পড়াশোনা করছেন। দেশে থাকতে তিনি ইসলামী ছাত্রশিবির গোলাপগঞ্জ উপজেলার আমুড়া ইউনিয়ন শাখার সেক্রেটারী ছিল। সাজানো মামলার আসামী হয়ে পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে তাকে। ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হামলা-মামলা ও পুলিশের হয়রানী থেকে রক্ষা পেতে শেষ পর্যন্ত পড়াশোনার উদ্দেশ্যে সে ইংল্যান্ডে চলে যায়। তবুও রেহাই নেই। সারোয়ার হোসেন মুর্শেদ যুক্তরাজ্যে যাওয়ার কিছুদিন পর থেকেই ছাত্রলীগ ক্যাডাররা তাকে খঁুঁজতে থাকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারবিরোধী অপপ্রচারের অভিযোগ এনে তারা সারোয়ার হোসেন মুর্শেদকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করতে থাকে। ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা আমার দোকান এবং সুন্দিশাইল গ্রামের বাড়িতে গিয়েও বারবার হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। সারোয়ার হোসেন মুর্শেদকে দেশে ফিরিয়ে এনে তাদের হাতে তুলে না দিলে পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলার ধামকি দিয়ে আসছে ছাত্রলীগ ক্যাডাররা। ঘটনাটি তিনি থানা পুলিশকে অবহিত করলেও কোন সহযোগিতা করছেনা তারা। তাই ছাত্রলীগ ক্যডাররা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ছাত্রলীগ ক্যাডাররা আমার দোকানে ভাংচুর, লুটপাট এবং আমাকে মারধর করেছে। নিজের জীবন নিয়ে ভাবছেননা তিনি। জীবন জীবিকার মাধ্যম ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর ও লুটপাট করে তাকে পথে বসিয়ে দিচ্ছে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা। সন্তানের পড়াশোনার খরচ চালানো তার জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। এতসবের মাঝেও তার পুত্র সারোয়ার হোসেন মুর্শেদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে তিনি শংকায় রয়েছেন। দেশে ফিরলে ছাত্রলীগ ক্যডাররা তাকে প্রাণে হত্যা করবে। অন্যদিকে মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী হওয়ায় পুলিশ তাকে খুঁজছে। তিনি আরও জানান-এ ঘটনায় গতকাল রাতে তিনি গোলাপগঞ্জ থানায় অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ জানায়, সারোয়ার হোসেন মুর্শেদ ওয়ারেন্ট ভূক্ত পলাতক আসামী। তাকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে। সারোয়ার হোসেন মুর্শেদকে তাদের হাতে তুলে না দেয়া পর্যন্ত কোনো অভিযোগ গ্রহণ করতে পারবে না বলে জানায় তারা।
তবে এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফজলুল হক শিবলী জানান, চৌমুহনী এলাকায় ‘শওকত ডিপার্টমেন্টাল স্টোর’ নামক দোকানে ছাত্রশিবিরের সাথে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয়েছে বলে তিনি খবর পেয়েছেন। তবে এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাননি তিনি। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযোগ পেলে দোষীদের সনাক্ত করতে পুলিশ জোরালো পদক্ষেপ নেবে বলে জানান তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন