• ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ৯ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

বড়লেখায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনার টিকার নিবন্ধন করে দিচ্ছে দ্যুতি’র সদস্যরা

Daily Jugabheri
প্রকাশিত আগস্ট ১, ২০২১
বড়লেখায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনার টিকার নিবন্ধন করে দিচ্ছে দ্যুতি’র সদস্যরা

বড়লেখা প্রতিনিধি ::: করোনা ভাইরাসের টিকা নিতে হলে আগে নিবন্ধন করতে হয়। কিন্তু গ্রামের অধিকাংশ মানুষ জানে না, কীভাবে নিবন্ধন করতে হয়। কারণ তাদের অনেকের কাছে নেই স্মার্টফোন। এই কারণে অনেকে টিকা নিতে পারছেন না। ফলে অনেকে করোনাক্রান্ত হচ্ছেন। তবে তাদের এই ভোগান্তি দূর করতে প্রসংশনীয় এক উদ্যোগ নিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দ্যুতি। এই সংগঠনের সদস্যরা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ‘সুরক্ষা অ্যাপের’ মাধ্যমে বিনামূল্যে নিবন্ধন করে দিচ্ছেন। পাশাপাশি তারা মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে পরামর্শও দিচ্ছেন। দ্যুতি মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। গত ২৬ জুলাই থেকে তারা এই কার্যক্রম শুরু করেছে। ইতিমধ্যে তারা তালিমপুর ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামের প্রায় ৬০০ মানুষের টিকার নিবন্ধন করে দিয়েছেন। এতে তাদের সহায়তা করছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিদ্যুৎ কান্তি দাস। এদিকে ঘরে বসে সহজে টিকার নিবন্ধন করতে পারায় এলাকার লোকজন দ্যুতির সদস্যদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন। এলাকাবাসী ও দ্যুতি’র সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আগামী মাস থেকে ইউনিয়ন পর্যায়েও করোনার টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ জন্য ইউনিয়ন পরিষদে টিকাকেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে আগে নিবন্ধন করতে হবে। কিন্তু গ্রামের অধিকাংশ মানুষ জানে না, কীভাবে নিবন্ধন করতে হয়। এই অবস্থায় গ্রামের মানুষের ভোগান্তি দূর করতে তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিবন্ধন করার উদ্যোগ নেয় বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দ্যুতি। এরপর গত ২৬ জুলাই থেকে সংগঠনের সদস্যরা নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করেন। প্রতিদিন সকালে গ্রামের মানুষের বাড়িতে গিয়ে ‘সুরক্ষা অ্যাপের’ মাধ্যমে তারা বিনামূল্যে টিকার নিবন্ধন করে দিচ্ছেন। এতে তাদের এই কার্যক্রমে সহায়তা করতে এগিয়ে এসেছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিদ্যুৎ কান্তি দাস। এরইমধ্যে তারা তালিমপুর ইউনিয়নের পশ্চিম গগড়া, দ্বিতীয়ারদেহী, কোনার গগড়া, চুলারকুড়ি, বড়ময়দান গ্রামের প্রায় ৬০০ মানুষের নিববন্ধন করতে পেরেছেন। দ্বিতীয়ারদেহী গ্রামের বাসিন্দা আফিয়া বেগম (৪২) বলেন, করোনার ভ্যাকসিন নিতে হলে আগে রেজিস্ট্রেশন করা লাগে। কিন্তু কীভাবে রেজিস্ট্রেশন করতে হয় তা আমরা জানতাম না। দ্যুতির সদস্যরা আমাদের বাড়িতে এসে করোনা টিকার দেওয়ার জন্য ফ্রি রেজিস্ট্রেশন করে দিয়েছেন। এখন আমরা ভ্যাকসিন দিতে পারব। এই সুযোগ করে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ। একই এলাকার বাসিন্দা শিপন আহমদ (২৮) বলেন, লকডাউনের মধ্যে দ্যুতির সদস্যরা আমাদের বাড়িতে এসে ফ্রি নিবন্ধন করে দিয়েছেন। এতে আমরা খুশি। এ বিষয়ে দ্যুতি’র সদস্য পিংকু দাস বলেন, দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। অনেক মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, করোনা থেকে সুরক্ষা থাকতে ভ্যাকসিনের কোনো বিকল্প নেই। আর ইতিমধ্যে ইউনিয়ন পর্যায়েও করোনার টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ভ্যাকসিন নিতে হলে আগে নিবন্ধন করতে হয়। কিন্তু গ্রামের মানুষ কীভাবে নিবন্ধন করতে হয় তা জানে না। এছাড়া লকডাউনের কারণে সবকিছু বন্ধ থাকায় মানুষজন ঘর থেকে বের হতে পারছে না। যার কারণে তারা নিবন্ধনও করতে পারছে না। এই কারণে সংক্রমণ আরও দ্রুত ছড়াচ্ছে। এসব কথা ভেবে আমরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। আমরা তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিনামূল্যে ‘সুরক্ষা অ্যাপের’ মাধ্যমে নিবন্ধন করে তা প্রিন্ট করে দিচ্ছি। পাশাপাশি মানুষকে আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছি। এতে আমাদের সহায়তা করছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিদ্যুৎ কান্তি দাস। এছাড়া মানুষ যাতে সহজে নিবন্ধন করতে পারে সেজন্য স্থানীয় বাজারে বুথ খোলার পরিকল্পনা রয়েছে। তালিমপুর ইউপি চেয়ার‌ম্যান বিদ্যুৎ কান্তি দাস বলেন, আগামী মাস থেকে সরকার ইউনিয়ন পর্যায়েও করোনার টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । এ জন্য ইউনিয়ন পরিষদে টিকাকেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। করোনা টিকা নিতে হলে আগে নিবন্ধন করতে হয়। তবে কীভাবে নিবন্ধন করতে হয়, তা গ্রামের অনেক মানুষ জানেনা। এজন্য অনেকে টিকা নিতে পারছেন না। দ্যুতির সদস্যরা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিনামূল্যে সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করে দিচ্ছেন। তারা এটি ভালো উদ্যোগ নিয়েছেন। বিষয়টি জেনে আমি টিকার নিবন্ধের পর প্রিন্টের ব্যবস্থা করে দিয়েছি।

সংবাদটি শেয়ার করুন